বিশ্বকাপ ক্রিকেটে টানা ৫ ম্যাচ হারার পর শান্তনার জয় পেলো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। নিজেদের অষ্টম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১৬০ রানের বড় ব্যাবধানের জয় পেলো ইংলিশরা। মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে, আগে ব্যাট করে বেন স্টোকসের সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৪০ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৭৯ রানে অলআউট হয় নেদারল্যান্ডস।
বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে দুই দলেরই। পয়েন্ট টেবিলের তলানির দুই দল ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস। ১০ দলের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড আছে সবার শেষে, ডাচরা নবম স্থানে। তবে, ২০২৫ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা পেতে উভয় দলের জন্যই ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ।
ইংল্যান্ডের দেওয়া ৩৪০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নেদারল্যান্ডসের শুরুটা ছিল একেবারেই ধীরগতির। সেখান থেকে আর সুবিধাও করা হয়নি তাদের। প্রথম ৫ ওভারে রান উঠেছে ২ এর কিছু বেশি। সেই চাপ সামাল দিতে গিয়েই কিনা ক্রিস ওকসের বলে কাটা পড়লেন ম্যাক্স ও ডড। দলীয় ১২ রানে পতন ঘটে প্রথম উইকেটের। পরের ওভারেই ফিরে যান দলের বড় ভরসা কলিন অ্যাকারম্যান। ১৩ রানেই পতন ঘটে ২য় উইকেটের। এবার বোলার ছিলেন ডেভিড উইলি।
এরপর প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেওয়ার কাজ করেছেন ওয়েসলি বারেসি এবং সাইব্র্যান্ড এংগেলব্রাখট। দুজন মিলে যোগ করেছেন ৫৫ রান। এই জুটি যখনই কিছুটা স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটের শিকার হন বারেসি। ১০০ রানের আগেই পতন ঘটে ৪র্থ উইকেটের। উইলির দ্বিতীয় শিকার হন সাইব্র্যান্ড। ততক্ষণে অবশ্য পেরিয়ে গিয়েছে ২২ ওভার। ডাচদের জন্য জয়টা তখন দূরের বাতিঘর।
এরপর স্কট এডওয়ার্ডস শুরু করেন নিজের সংগ্রাম। মাঝে বাস ডি লিট ফিরে গিয়েছেন। জুটি গড়েছেন তেজা নিদামানুরুর সঙ্গে। দুজনের জুটি থেকে আসে ৫৯ রান। ওটাই ছিল ডাচদের শেষ আশা ভরসা। ১৬৩ রানে এডওয়ার্ডস আউট হলে ডাচদের হার হয়ে যায় সময়ের ব্যাপার। ১৬ রানেই পতন ঘটে শেষ ৫ উইকেটের। ডাচটা গুটিয়ে যায় ১৭৯ রানে। ইংল্যান্ডের জয় আসে ১৮০ রানের ব্যবধানে।
এর আগে পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ইংলিশদের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড মালান। এই দুই ওপেনারে উড়ন্ত সূচনা পায় ইংল্যান্ড। শুরু থেকেই দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকেন এ দুই ব্যাটার ৪৮ রানের জুটি গড়েন। তবে এ জুটি বড় করতে পারেননি ইংলিশরা। ইনিংসের সপ্তম ওভারে আরিয়ানের বলে বেয়ারস্টো আউট হলে ভাঙ্গে এই জুটি। সাজঘরে ফেরার আগে ১৫ রান করে এই ইংলিশ ব্যাটার।
দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট হাতে নামেন জো রুট। তাকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় ইনিংস এগিয়ে নিতে থাকেন ওপেনার মালান। তবে দলীয় ১৩৩ রানে রুট আউট হলে ভাঙে ৮৫ রানের এই জুটি। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ২৮ রান করেন তিনি। এদিকে সঙ্গী আউট হলে দেখে শুনে খেলতে থাকা ওপেনার মালান ফিফটির পর চড়া হতে থাকেন ডাচ বোলারদের ওপর, ছিলেন সেঞ্চুরির পথেও।
তবে দলীয় ১৩৯ রানে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হয়ে ফেরেন সাজঘরে। আউট হবার আগে ৮৭ রান করেন এই ওপেনার। এরপর উইকেটে নামা হ্যারি ব্রুক ও জস বাটলার দুজনের কেউই বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। আউট হওয়ার আগে এ দুই ব্যাটার যথাক্রমে ১১ ও ৫ রান করেন।
ষষ্ঠ উইকেটে বেন স্টোকস ও মঈন আলী দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। তবে উইকেটে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি মঈন দলীয় ১৯২ রানে ৪ করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। শেষ দিকে বেন স্টোকসের ঝড়ো শতকে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৩৯ রানের সংগ্রহ পায় ইংলিশরা। নেদারল্যান্ডসের হয় বল হাতে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন বাস ডি লিড।